আমাদের শীতকাল কি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে?
খুব বেশি দূরে না, এখন থেকে মাত্র ৫-১০ বছর পেছনে গেলেই দেখবেন- অক্টোবর মাসে কী তুমুল শীত পড়ত। আমার এখনো মনে আছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই শীত পড়া শুরু হতো। অক্টোবরে শীত পুরোপুরি ঝেঁকে বসত। আর এখন, লাস্ট কয়েক বছর ধরে বছরের প্রায় প্রতিটা মাসেই কিছু না কিছু বৃষ্টি হচ্ছে। অক্টোবর মাস প্রায় শেষ! এখনো শীতকাল আসার নামগন্ধ নেই। উলটো একটা মাঝারি ঘূর্ণিঝড় এসে অনেককিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেল! লাস্ট কয়েক বছর ধরে শুধু ডিসেম্বর – জানুয়ারি মাসে শীতকাল থাকছে, মাত্র দেড় / দুই মাস।
যে সময়, শীতপিঠা খাওয়ার কথা, কম্বল মুড়ি দিয়ে আরামে ঘুম দেওয়ার কথা; সে সময় আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করছি। কিছু বড়ো লোকের বে*রে*ন*লেস বাচ্চারা ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ট্রল করা, রোমান্টিকতা মা*রা*নিতে ব্যস্ত। অথচ, অসময়ের একটা ঘূর্ণিঝড় কী কী আঘাত দিয়ে গেছে, এর লং টার্ম প্রভাব কী; এসব নিয়ে ভাবার অবকাশ ওদের নেই।
#আরও পড়ুন » বিবর্তন
মাঝারি ঘূর্ণিঝড় হবার পরেও, গতিপথ ঠিকমতো বুঝা না যাওয়ায়, সব এলাকার লোকেদের প্রপারলি সতর্ক করা যায়নি। ফলে ১০+ মানুষ মা*রা গেছে সারাদেশে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শীতকালীন সবজির আবাদ আর আমন ধান।
এমনিতে সামনে দুর্ভিক্ষ আসছে, দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় অধিক ফসল দরকার। ইতোমধ্যেই বাজারে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, সবকিছুর দাম আকাশচুম্বী। এর মধ্যে শীতকালীন সবজিগুলো এই সময় একটু কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু এবার, শীতের অনেক আগাম সবজি হার্ভেস্টের আগে আগেই সিত্রাং এ ভেসে গেছে। নিউজের তথ্যমতে, শুধু নোয়াখালী জেলাতে ৩০ হাজার হেক্টর আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে! সারাদেশে এই পরিমাণটা কত হবে হিসেব করেন। ঢাকা চলে আসায়, আমাদের নিজেদের ধানের কী অবস্থা ঠিকমতো জানি না!
এসব পরিস্থিতি চিন্তা করলে খুব হতাশ লাগে, কিছু করার ক্ষমতা না থাকায় কিংবা কিছু করতে না পারায় নিজের চুল নিজে ছিঁড়*তে ইচ্ছে করে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছি আমরা নিজেরাই। পাকা বিল্ডিং বানানোর জন্য বসতবাড়ির সব গাছ কেটে ফেলেছি। আর টাকার লোভে, বন-পাহাড়-নদী ধ্বংস করেছি। বিশেষ করে চোরাই গাছ কাটার ফলে, আমাদের পার্বত্য জেলাগুলোতে গাছের পরিমাণ কী লেভেলে কমেছে নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। আমাদের ছোটোবেলা আর এখনের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। আর এসবের প্রভাব পড়েছে আমাদের জলবায়ুতে। শীতকাল হারিয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। অসময়ে বন্যা – ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে।
#আরও পড়ুন » এক ভাষা সেনাপতির কথা!
আর এগুলো মোকেবেলায় কিংবা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার বদলে, প্রশাসন আর বড়ো বড়ো টাকার কু*মি*রেরা আরও টাকা বাড়ানোর ধান্ধায় আছে! সাধারণ জনগণ ফেসবুকে ট্রল মা*রা*নিতে ব্যস্ত। নতুন প্রজন্মের তরুণেরা, ফেসবুকে ঝড় নিয়ে রোমান্টিকতা মা*রা*নিতে ব্যস্ত। আরে ভাই, দেশটাই পানির তলে ডুবে গেলে, তোমাদের ফিউচার প্রোডাকশনই তো আটকে যাবে! নাকি অ্যাকুয়াম্যান হয়ে যাবে সবাই!
ইটস হাই টাইম টু থিংক অ্যাবাউট দিজ সিরিয়াস ইস্যু!